অদ্য ২৮/০৩/২০২৩ ইং তারিখে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নয়াগ্রাম কমিউনিটি ক্লিনিকে কুড়িগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের আয়োজনে, বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর অর্থায়নে-সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত, হাতিয়া ইউনিয়নের ৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ম্যানেজমেন্ট কমিটির ৫ জন করে সদস্য নিয়ে মোট ২৫ জন সদস্য নিয়ে ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন, উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাতিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী ইনস্পেক্টও ( এ,এইচ, আই ) জনাব মো: মিজানুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন উম্মে সাউদা মৌরিন, রিসার্স এ্যাসোসিয়েট, ব্র্যাক জে পি জি এস পি এইচ। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের প্রকল্প ম্যানেজার রাজেশ অধিকারী। সভাটি পরিচালনা করেন সলিডারিটির ফোকাল পার্সন কমলা রানী পাল। সভায় সার্বীক সহযোগীতা করেন কো ফোকাল পার্সন সুনীল কুমার দাস।
সভার আলোচনা সমূহঃ
- রেজিস্ট্রেশন ও আসন গ্রহন
- পরিচয় পর্ব ও শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান।
- প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা।
- স্বাস্থ্য খাত, কমিউনিটি ক্লিনিকের পটভুমি ও কমিউনিটি ক্লিনিকের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করণ।
- সমাপনী বক্তব্য ও সভা সমাপ্তি করণ।
- সভায় অংশগ্রহন কারীর সংখ্যাঃ ৩০ জন। পুরুষ- ২৫ জন, নারী- ০৫ জন।
রেজিস্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন করে অতিথিগণের আসন গ্রহন কাজ সমাপ্ত করা হয়।
আলোচনায় সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি ও নতুন অনন্তপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয় সভার সভাপতি মো: রাজ্জাকুল ইসলাম, তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচকে ধন্যবাদ জানান এবং হাতিয়া ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকের কি কি সমস্যা গুলো রয়েছে এবং সেগুলো কিভাবে সমধান করা যায় এর উপর আলোচনা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
আলোচনায় প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সর্ম্পকে আলোচনা করেন সলিডারিটির ফোকাল পার্সন কমলা রানী পাল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ সলিডারিটির মাধ্যমে ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকে কুড়িগ্রাম জেলা সদর, উলিপুর উপজেলা ও হাতিয়া ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম, উপজেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম,্ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা যুব ফোরাম, উপজেলা যুব ফোরাম,ও ইউনিয়ন যুব ফোরাম গঠন করা হয়েছে যাহা বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পুরণে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।
আলোচনায় বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের প্রকল্প ম্যানেজার রাজেশ অধিকারী কমিউনিটি ক্লিনিকের পটভুমি এবং গত অর্থ বছরের স্বাস্থ্য খাতের ফিটব্যাক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল, উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাতিয়া ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো কি অবস্থায় রয়েছে তা বর্ণনা করেন।
হিজলি (নয়াগ্রাম) কমিউনিটি ক্লিনিকের সি এইচ সিপি মো: রিপন মিয়া বলেন যে, আমার কমিউনিটি কিøনিকে টিউবওয়েল নেই, পরিস্কার পরিছন্নতা কর্মী নেই। এফ ডবিøউ এ এবং স্বাস্থ্য সহকারী সপ্তাহে ৩ দিন করে বসার কথা কিন্তু তারা এক দিনও অফিসে আসেনা। নিজেকে একাকি সকল সেবা দিতে হয়, তা কোনভাবেই সম্ভব হয়না। তাছাড়া জনগণের চাহিদা অনুযায়ী পরিমান মতো ঔষুধ পাওয়া যায়না।
ঠুটিয়ার পাড় কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি ও ইউপি মেম্বার নুর ইসলাম বলেন যে,কমিউনিটি ক্লিনিকে কি কি ঔষুধ পাওয়া যায় তার কোন তালিকা নেই। ক্লিনিকে কোন বিদ্যুৎ ব্যবস্থ্যা নেই, ফলে বিশেষ করে গরমের দিনে বেশি সময় ধরে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হয়।।
নতুন অনন্তপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সি এইচ সিপি মোসলেমুন্নাহার বলেন যে, ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা তাদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করেন না। কোন সমস্যার কথা জানালেও তারা সমাধান করেন না।
হাতিয়া ভবেস কমিউনিটি ক্লিনিকের সি এইচ সিপি মোজাফ্ফর রহমান বলেন যে, একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৎসরে ১২টি মিটিং হওয়ার কথা কিন্তু মিটিংগুলো সঠিক ভাবে করা হয়না। ফলে ক্লিনিকের অবস্থ্যা আশানুরুপ নয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহন:
১. কমিউনিটি ক্লিনিকের ম্যানেজমেন্ট কমিটির মিটিংগুলো যথাযথ ভাবে করা।
২. এফ ডাবিøউ এ এবং স্বাস্থ্য সহকারী কে সপ্তাহে ৩ দিন ক্লিনিকে উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৩. এলাকা ভিত্তিক জনগণের চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ নিশ্চিত করা।
৪. যে কোন ধরনের সমস্যা ম্যানেজমেন্ট কমিটির মিটিং এর মাধ্যমে সমাধান করা।
৫. টিউবওয়েলের জন্য সিএইচসিপি ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মিলে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করা।
৬. কমিউনিটি ক্লিনিকে কি কি ঔষুধ পাওয়া যায তার তালিকা ঝুলানো।
৭. পরবর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের সাথে মিটিং এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য সভাপতি মহোদয় দায়িত্ব গ্রহন করেন।
পরিশেষে আলোচনায় সকলের আলোচনার প্রেক্ষিতে সভাপতি উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ সরকার বলেন যে, আমাদেও এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকে বহুবিধ সমস্যা রয়েছে । আজকের সভায় যে সকল সমস্যা চিহ্নিত হলো এবং যে সকল সিদ্ধান্ত গুলো গ্রহন করা হলো আর আমরা সকলে যদি সচেতন হই এবং সরকারের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যদি তাদের দায়িত্ব যথাযত ভাবে পালন করেন, এবং জনগণ যদি তার অধিকার সর্ম্পকে সচেতন হয় তাহলে অবশ্যই জনগণ স্বাস্থ্য খাতের সুফল গ্রহন করতে পারবে।
অতঃপর সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার কাজ শেষ করেন।
সুনীল কুমার দাস
কো- ফোকাল পার্সন, সলিডারিটি, কড়িগ্রাম।
Citizen's Voice